SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - NCTB BOOK

পরিবারের সবার দৈনিক খাদ্য পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য খাদ্য পরিকল্পনা করা হয়। এই খাদ্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সঠিক উপায়ে খাদ্য প্রস্তুত করতে হয়। প্রস্তুতকৃত খাদ্য দ্রব্যাদি সুনির্দিষ্ট কৌশল অবলম্বন করে গ্রহণের জন্য ব্যবস্থা করা হয়- যাকে বলা হয় খাদ্য পরিবেশন। খাদ্যদ্রব্য সম্পূর্ণভাবে তৃপ্তিদায়ক করার জন্য বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে খাদ্য প্রস্তুত পরিবেশন গুরুত্বপূর্ণ।

Content added By

খাদ্য গ্রহণের উদ্দেশ্য শুধু ক্ষুধা নিবারণ নয়। খাদ্য গ্রহণের প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো যেসব খাদ্য খাওয়া হয় তা যেন শরীরকে কর্মক্ষম রাখে, ক্ষয়পূরণ করে বৃদ্ধিসাধন অব্যাহত রাখে এবং শরীরকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন করে তোলে। জন্য প্রয়োজন খাদ্যের সব উপাদানসমৃদ্ধ সুষম খাদ্যের। সুষম পুষ্টিকর আহারই দেহের প্রতিটি অবস্থায় প্রয়োজন অনুযায়ী শক্তি সরবরাহ করে দেহকে সুস্থ রাখতে পারে। জন্য বয়স (শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ) পরিশ্রমের ধরণ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য খাদ্য ব্যবস্থার পরিকল্পনা করতে হয়। এই পরিকল্পনার উপায় হলোমেনু তৈরি।

প্রতিদিনের আহারে কী কী খাদ্য পরিবেশন করা হবে তার জন্য মেনু পরিকল্পনা করা উচিত। মেনু পরিকল্পনায় পরিবারের বাজেট বা আয় অনুযায়ী প্রত্যেক সদস্যের রুচি, চাহিদা, বয়স, খাদ্য প্রস্তুত পদ্ধতি প্রভৃতি বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে

পরিবারের তিন বেলার আহার ছাড়া শিশুর পরিপূরক খাবার, রোগীর পথ্য, বিয়ে, জন্ম দিন, অতিথি আপ্যায়ন ইত্যাদি যে কোনো উপলক্ষেই খাদ্য প্রস্তুতের আগেই একটা পরিকল্পনা করে নেওয়া ভালো। মেনু তৈরির মাধ্যমে খাদ্য ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে খাদ্যের তালিকা তৈরি করা হয়। মোটকথা মেনু পরিকল্পনা খাদ্যের একটি তালিকা বিশেষ। অর্থাৎ যে কোনো খাদ্য ব্যবস্থায় কী খাবার পরিবেশন করা হবে তা স্থির করে যে লিখিত খাদ্য তালিকা তৈরি করা হয় তাকেই মেনু বলে। মেনু পরিকল্পনার মাধ্যমে সুষম, আকর্ষণীয় এবং পুষ্টিকর খাদ্য পরিবেশন করা যায়।

মেনু তৈরির বিবেচ্য বিষয়

মেনু তৈরির মাধ্যমে যাতে পরিবারের খাদ্য ব্যবস্থা সুষম হয় সে জন্য কতোগুলো বিষয় বিবেচনা করতে হয়। সেগুলো নিম্নরূপ

  • বয়স : একটা পরিবারে বিভিন্ন বয়সের লোক থাকে। বিভিন্ন বয়সের লোকদের খাদ্যের চাহিদার ভিন্নতার বিষয়টি মনে রাখা প্রয়োজন। যেমন : শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য দুধ-জাতীয় খাবারের প্রাধান্য দিতে হয় বৃদ্ধ প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ভিটামিনযুক্ত খাদ্য দরকার। পরিবারের গর্ভবতী প্রসূতি মায়ের জন্য স্বাভাবিক মায়ের তুলনায় বেশি ক্যালরি প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন
  • শ্রম : পরিশ্রমের ধরন ক্যালরির চাহিদাকে প্রভাবিত করে। তাই মেনু তৈরির সময় পরিবারের সদস্যদের পরিশ্রমের মাত্রা যাচাই করে পর্যাপ্ত ক্যালরিবহুল খাদ্যের সমন্বয় ঘটাতে হবে। যেমন: বিশেষ করে যারা কঠিন পরিশ্রমের কাজ করে তাদের খাদ্যে কার্বোহাইড্রেট স্নেহ বেশি থাকা ভালো। অপর দিকে হাল্কা পরিশ্রমী বা যারা মানসিক শ্রম করে এবং বৃদ্ধ ব্যক্তি যাদের শারীরিক পরিশ্রম কম তাদের জন্য কম কার্বোহাইড্রেট স্নেহ প্রয়োজন

 

আয় মেনুতে পুষ্টিকর খাদ্য সংযোজনের বিষয়টি একটা বাজেটের উপর নির্ভর করে। আয়ের উপর ভিত্তি করে পরিবারের জন্য সম্পূর্ণ মাসব্যাপী পুষ্টিকর খাদ্য যোগান দিতে হয়। সুষম খাদ্যের উপাদান অল্প মূল্যের খাদ্য থেকে সংগ্রহ করে স্বল্প ব্যয়ে মেনু পরিকল্পনা করা যুক্তিযুক্ত। খাদ্যের মূল্য কমানোর জন্য সুষম খাদ্যের উপাদানসমূহ বাদ দেওয়া চলবে না। তাই দামি খাবারের পাশাপাশি তুলনামূলক সস্তা অথচ পুষ্টিকর খাদ্যের সমন্বয় থাকা বাঞ্ছনীয়।

আবহাওয়া মৌসুম আমাদের দেশে ঋতু ভেদে বিভিন্ন ফলমূল, তরিতরকারির সমাগম ঘটে। এগুলো পুষ্টিকর, সুস্বাদু এবং সহজলভ্য হয়ে থাকে। খাদ্য তালিকায় মৌসুমি খাদ্যদ্রব্য সংযোজন করলে স্বাদেও বৈচিত্র্য আসে এবং মূল্য সাশ্রয়কারী খাদ্য তালিকাও বানানো যায়

 লিঙ্গ ছেলে-মেয়েভেদে খাদ্যের চাহিদা ভিন্ন হয়। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের দেহের আয়তন, ওজন পেশির পরিমাণ কম। জন্য মেয়েদের ক্যালরি অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের চাহিদাও অপেক্ষাকৃত কম হয়।

উপলক্ষ পরিবারের সদস্যসংখ্যা, আর্থিক সঙ্গতি, রুচি ইত্যাদি বিবেচনা করে দৈনিক খাদ্য তালিকা তৈরি করা যায়। তবে ছোট বা বড় যে কোনো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে মেনু একটি আকর্ষণের বিষয়। কেননা এতে সাধারণ খাবারের কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটে থাকে। যেমন: বিয়ে, জন্মদিন, মিলাদ, ঈদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে মেনু

তৈরিতে বতিক্রম থাকে

 বৈচিত্র্য সৃষ্টি মেনুতে নানা রং, নানা আকার, নানা প্রকৃতি এবং নানা পদ্ধতিতে রান্না করা খাবার দিয়ে আকর্ষণীয় বৈচিত্র্যময় করা যায়। মেনুতে সব খাবারই যদি সাদা বা একই রংয়ের হয় তাহলে দেখতে

আকর্ষণীয় হয় না। তেমনি সব খাবারই যদি নরম শুকনা হয় তাহলে খেয়ে পরিতৃপ্ত হওয়া যায় না বিভিন্ন রঙের খাবারযেমন : টমেটো, গাজর, কলা, মটরশুঁটি, দুধ, দই, ভাত, জর্দা ইত্যাদি। বিভিন্ন আকারের খাবারযেমন : সিঙ্গারা, স্যান্ডউইচ, পাউরুটি, কেক, নিমকি ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকৃতির খাবারযেমন: সুপ, ক্ষীর, হালুয়া, কাস্টার্ড, পুডিং, পাপড়, চিপস ইত্যাদি।

এক পরিবেশন পরিমাপ মেনুতে তালিকাভুক্ত খাবারগুলো কতোজন লোক গ্রহণ করবে তার উপর খাবারের মোট পরিমাণ নির্ভর করে। মেনুতে যেসব খাদ্য রাখা হয় তার প্রতিটি প্রত্যেক ব্যক্তিকে অন্তত এক পরিবেশন পরিমাণ বরাদ্দ করতে হয়। যেমন: রান্না করা শাক এক পরিবেশন = / কাপ

দুধ দুগ্ধজাত খাদ্য এক পরিবেশন পরিমাণ

টাটকা দুধ                                       ১ কাপ

দই                                                                                                                           কাপ

  

 

                                                                        কাপ

/ কাপ

/ কাপ

আইসক্রিম

টা

রসগোল্লা

প্রোটিন জাতীয় খাদ্য এক পরিবেশন পরিমাণ

কাঁটা ছাড়া মাছ

৩০ গ্রাম

৩০ গ্রাম

ডিম

ডাল

টা

২৫ গ্রাম

শাক-সবজি, ফল এক পরিবেশন পরিমাণ

রান্না করা শাক

/ কাপ

রান্না করা সবজি

/ কাপ

/ কাপ

সালাদ

১টি

ফল মাঝারি আকার

শস্য জাতীয় খাদ্য এক পরিবেশন পরিমাণ

ভাত

কাপ

আটার রুটি

২টি

পাউরুটি

টুকরা

১৮০ গ্রাম

আলু

 

ছাড়া মেনু তৈরি করার সময় পরিবেশনের ধরন, সঠিক রেসিপির ব্যবহার, তৈজসপত্র আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদির সুবিধা, দক্ষ রন্ধনকারী, উদ্বৃত্ত খাদ্যের ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হয়

নমুনা : একটি পরিবারের এক দিনের মেনু।

পরিবেশন সংখ্যা

সময়

স্বল্প মূল্যের খাবার

দামি খাবার

সকালের নাশতা

আটার রুটি, সবজি ভাজি, কলা, চা

পরোটা, ডিম ভাজা, আপেল, কফি

দুপুরের খাবার

সাধারণ চালের ভাত, ডাল, শাক, ছোট মাছ, লেবু, কাঁচা মরিচ

বিকাল

মুড়ি মাখা, চা

চিকন চালের ভাত, বড় মাছের তরকারি, সালাদ

ফলের রস/কফি, কেক

রাতের খাবার

ভাত, ডিমের তরকারি, ডাল, আলু ভর্তা

ভাত, মুরগির ঝোল, আলুর চপ, সালাদ

Content added || updated By

সুষম খাদ্য ব্যবস্থাপনার জন্য মেনু অর্থাৎ খাদ্য তালিকা তৈরি করা হয়। এই খাদ্য তালিকায় খাদ্যগুলো তখনই মুখরোচক, আকর্ষণীয় তৃপ্তিদায়ক হয়ে উঠে যখন তা সঠিক পদ্ধতিতে রান্না করা হয়। রান্নার কাজটা আপাতভাবে সহজ মনে হলেও প্রায়ই দেখা যায় কোনো না কোনো ত্রুটি থেকে যায়। একই খাবার একবার মানসম্মত সুস্বাদু হলেও পরবর্তী সময় আবার সে রকম মজাদার নাও হতে পারে। কিন্তু একই পদ্ধতিতে এবং পরিমাণমতো উপকরণ দিয়ে রান্না করলে প্রতিবারই রান্না করার বস্তুর মান একই রকম রাখা যায়। কারণেই তৈরি হয়েছে রেসিপি। রেসিপি এমন একটা নির্দেশক যা কীভাবে এবং কী কী উপকরণ কী পরিমাণ  ব্যবহার করে রান্না করা হবে তার বিস্তারিত বিবরণ থাকে। সুতরাং রেসিপি বলতে বোঝায় রান্নার প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহের তালিকা, পরিমাণ, রন্ধন পদ্ধতির লিখিত পথ নির্দেশ বিশেষ।

রান্নাকরা প্রতিটি খাদ্যেরই নিজস্ব উপকরণ, পরিমাণ রন্ধন পদ্ধতি থাকে। যেমন, পুডিং, আলুর চপ, কাবাব ইত্যাদি।

রেসিপিতে রান্নার সময় সম্পর্কযুক্ত যে তথ্যগুলো দেওয়া হয় সেগুলো হলো

খাবারের নাম

ব্যবহৃত উপকরণের নাম

উপকরণের পরিমাণ

রান্নায় ব্যবহৃত মাংস কিংবা তরকারির কাটার ধরন

রান্নার ধারাবাহিক ধাপসমূহ

রান্নায় ব্যবহৃত তাপমাত্রা

সময়

পরিবেশন সংখ্যা

পরিবেশনের ধরণ

 

রেসিপি কী কাজে লাগে

  • রেসিপি থেকে খাবার প্রস্তুত করার প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো মেপে নেওয়া হয় ফলে কোনো জিনিসের অপচয় হয় না।
  • আদর্শ রেসিপিতে পরিবেশন সংখ্যা উল্লেখ থাকে। ফলে কতোজন লোক খেতে পারবে তা সহজেই অনুমান করা যায় এবং পরিবেশনের কাজটি সহজ হয়।
  • রেসিপি অনুসরণ করে যে কোনো নতুন রান্না আয়ত্তে আনা যায়। মেনুর সাথে রেসিপির নির্দেশনা থাকলে দক্ষ পাঁচক অতি সহজেই তা অনুসরণ করে খাদ্য প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়।
  • পাচকদের নিকট রেসিপি থাকলে রান্না করা খাবারের মান পরিমাণ যাচাই করতে সুবিধা হয়।

 

রেসিপি ব্যবহার করার সময় লক্ষণীয় বিষয়- রেসিপি সঠিকভাবে বুঝে অনুসরণ করতে হবে

  • রেসিপিতে উল্লিখিত পরিমাণমতো উপকরণ ব্যবহার করতে হবে।
  • কোনো উপকরণ বাদ দেওয়া ঠিক নয়।
  • রেসিপিতে লেখা কলাকৌশল অবলম্বন করতে হবে।
  • যে অবস্থায় (গরম, ঠান্ডা, তরল, কঠিন) খাবার পরিবেশন করার কথা উল্লেখ থাকবে সেইভাবেই করতে হবে।
  • রেসিপিতে নির্দেশিত রন্ধন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
  • রেসিপি বুঝতে হলে খাদ্যের মাপ, ওজন, রান্নার সরঞ্জাম, রান্নার কৌশল পদ্ধতি, উপকরণ মসলা এবং বিনিময় বা বিকল্প খাদ্য সম্পর্কে ধারণা ইত্যাদি বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন।

কাজ : খাদ্য প্রস্তুতকরণে রেসিপির গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর

 

Content added || updated By

মেনু তৈরি করার পর খাদ্য প্রস্তুত করার প্রস্তুতি নিতে হয়। খাদ্য প্রস্তুতকরণের পূর্বে কতোগুলো বিষয় বিবেচনা করতে হয়-

  • কী খাদ্য প্রস্তুত করা হবে তা মেনু অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে।
  • যে যে খাদ্য প্রস্তুত করা হবে সেই খাদ্য তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হবে।
  • খাদ্য প্রস্তুত করার আগে সঠিক রেসিপি জেনে নিতে হবে। ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ নেওয়া যায়। কাঁচা মাছ-মাংস, শাকসবজি বেছে, কেটে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  • সঠিক রন্ধন পদ্ধতি অনুসরণ করে খাদ্য প্রস্তুত করতে হবে।
  • খাদ্য প্রস্তুতের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় যেমন : খাবার ঢেকে রান্না করা, বেশি তাপে খাদ্য রান্না না করা ইত্যাদি খাদ্য প্রস্তুত করার সাথে সাথে পরিবেশনের প্রস্তুতি নিতে হয়।
  • খাদ্য প্রস্তুতের পর পরই খাদ্য গরম গরম পরিবেশন করতে হয়।
  • বড় সসপ্যানে ফুটানো পানি দিয়ে দুধ-ডিম মেশানো পাত্রটি মুখ বন্ধ করে এমনভাবে বসাতে হবে যাতে পাত্রটির / অংশ পানিতে ডুবে থাকে।
  • চুলার আঁচ মাঝামাঝি করে ঘণ্টা ফুটাতে হবে।
  • পুডিং সম্পূর্ণরুপে জমে গেলে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।
  • ঠান্ডা হলে ছুরি দিয়ে পুডিং-এর চারদিক ছাড়াতে হবে। প্লেটে তৈরি করা পুডিং-এর পাত্রটি উল্টে পুডিং ঢেলে নিতে হবে।

পরিবেশন সংখ্যাপ্রস্তুতকৃত পুডিংয়ের পরিমাণ প্রায় ৫০০ গ্রাম। দুগ্ধজাত খাদ্য পুডিংয়ের এক পরিবেশন পরিমাণ / কাপ বা ১২৫ গ্রাম। এর ফলে প্রস্তুতকৃত খাদ্যের পরিবেশ সংখ্যা অর্থাৎ জন খেতে  পারবে।

রেসিপির নমুনা-

খাদ্যের নামসবজি নিরামিষ

উপকরণ

পরিমাণ

২০০ গ্রাম

মিষ্টি কুমড়া

কেজি

বেগুন

১০০ গ্রাম

১০ পরিবেশন

পটোল

২০০ গ্রাম

২০০ গ্রাম

পেঁপে

আলু

৩০০ গ্রাম

চা চামচ

আদা বাটা

রসুন কাটা

/ চা চামচ

হলুদের গুঁড়া

মরিচের গুঁড়া

/ চা চামচ

/ চা চামচ

ধনের গুড়া

জিরার গুঁড়া

চা চামচ

/ চা চামচ

পেঁয়াজ কুচি

/ কাপ

লবণ

চিনি

চা চামচ

পরিমাণমতো

কাঁচা মরিচ

তেজপাতা

/ চা চামচ

তেল

২টি

১০০ গ্রাম

পাঁচ ফোড়ন

পরিমাণ মতো

প্রস্তুতকৃত খাদ্যের পরিমাণ (পরিবেশন সংখ্যা)

 

                                                                                                                         

প্ৰস্তুত প্রণালি :

  • সবধরনের সবজিগুলো কাটার আগে ভালো করে ধুতে হবে।
  • সবজিগুলো পছন্দমতো টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
  • গরম তেলে পেঁয়াজ কুচি, বাটা গুড়া মসলাগুলো কষিয়ে নিতে হবে।
  • বেগুন মিষ্টি কুমড়া ছাড়া বাকি সব সবজি লবণ দিয়ে নেড়ে নিতে হয় - মিনিট পর কাপ গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
  • পানি ফুটলে বেগুন, মিষ্টি কুমড়া দিয়ে ভালো করে ঢেকে মৃদু জ্বালে রাখতে হবে।
  • ১০-১৫ মিনিট পর সবজি সিদ্ধ হলে কাঁচা মরিচ, চিনি টালা পাঁচফোড়নের গুঁড়া ছড়িয়ে দিতে হবে।
  • পানি শুকিয়ে তেল ওপরে উঠলে চুলা থেকে নামাতে হবে।

পরিবেশনের সংখ্যা এই রেসিপিতে রান্না করা সবজির পরিমাণ কেজি। রান্না করা সবজির পরিবেশন = / কাপ। এটা দশজনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এর ফলে প্রত্যেকে অন্তত পরিবেশন পরিমাণ পাচ্ছেযা একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির ন্যূনতম পুষ্টি চাহিদা মেটায়

Content added By

 

খাদ্য যথাযথভাবে পরিবেশনের মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণের সম্পূর্ণ তৃপ্তি আনন্দ লাভ করা যায়। খাদ্য পরিবেশন হচ্ছে একটা কৌশলগত পদ্ধতি, যার মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা হয়।

যে পদ্ধতিতে মেনু অনুযায়ী প্রস্তুত খাদ্য দ্রব্যটি কোনো সুনির্দিষ্ট কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে ব্যক্তিবর্গের গ্রহণের জন্য উপস্থাপন করা হয় তাকে খাদ্য পরিবেশন বলে।

সুন্দর পরিবেশনের মাধ্যমে খাদ্য ব্যবস্থার উদ্দেশ্য পূর্ণতা লাভ করে। বাড়িতে, বাইরে কিংবা বিভিন্ন উৎসবে খাদ্য পরিবেশনের ব্যবস্থা সুন্দর সুষ্ঠু হওয়া একান্ত প্রয়োজন। পরিবেশনের সাথে পারিবারিক ঐতিহ্য, সামাজিক আচার-আচরণ সম্পর্কযুক্ত। জাতিগত, সামাজিক পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব খাদ্য পরিবেশন ব্যবস্থাপনায় বিবেচনা করা দরকার।

টেবিল সাজানো

সাধারণত খাবার যখন টেবিলে সাজানো হয় সেটাই পরিবেশন। খাবার আগে টেবিল গোছানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে খাওয়ার কাজটি সহজ আনন্দময় করা। খাবার টেবিলে খাদ্য গ্রহণের আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় বাসনপত্র সুসজ্জিত থাকলে তা আহারে তৃপ্তি বাড়ায়।

টেবিল সাজানোর ধারাবাহিকতা নিম্নরূপ

  • টেবিলে কাপড় বিছানো ম্যাট সাজানো।
  • সজ্জামূলক সামগ্রী দিয়ে সাজানো যেমনখাবার টেবিলের উপযোগী পুষ্পবিন্যাস করা, খাদ্য গ্রহণকারীর সংখ্যা অনুযায়ী টেবিল-চেয়ারের ব্যবস্থা করা।
  •  
  • খাবারের পাত্র সাজাতে হয়। ক্ষেত্রে ঘরোয়া কিংবা আনুষ্ঠানিকতার মাত্রা রীতি অনুযায়ী সাজাতে হয়।
  • খাদ্য গ্রহণের টেবিল বা স্থানটি সুবিন্যস্ত এবং শান্ত মনোরম পরিবেশে হওয়া দরকার। জন্য প্রয়োজন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আলোকিত পরিবেশ

আনুষ্ঠানিক পরিবেশন

কোনো নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের জন্য যে ভোজের আয়োজন করা হয় তাকেই আনুষ্ঠানিক ভোজ বলে। ধরনের ব্যাপক আয়োজন সাধারণত : রাষ্ট্রীয় ভোজ, সামাজিক আচার-আচরণ, বাৎসরিক প্রীতিভোজ, বিবাহ অনুষ্ঠান : ইত্যাদি ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। ছাড়া হোটেল, রেস্তোরাঁর খাবার পরিবেশনও আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা। আনুষ্ঠানিক ভোজের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো নিম্নরূপ

  • আনুষ্ঠানিক ভোজে পদমর্যাদা অনুযায়ী চেয়ার, টেবিল সাজানো হয়ে থাকে।
  • আনুষ্ঠানিক ভোজের বিশেষত্ব হচ্ছে প্রত্যেক অতিথির জন্য এককভাবে প্রতিটি খাবারের পরিবেশনের
  • জন্য একক মোট পরিমাণ (unit) সাজানো থাকে অথবা পরিবেশনকারী পর্যায়ক্রমে পরিবেশন করে থাকে। সাধারণত আনুষ্ঠানিক ভোজে প্রধান অতিথির টেবিলের বিপরীত দিকে নিমন্ত্রণকারী বা হোস্ট/হোস্টেসবসার রীতি।
  • আনুষ্ঠানিক ভোজে একই সাথে সব খাদ্য টেবিলে সাজানো থাকে না। বরং পরিবেশনকারী প্রধান খাদ্য থেকে শুরু করে খাবার শেষে বিভিন্ন ডেজার্ট (ফলমূল/মিষ্টি/পানীয় ইত্যাদি) পরিবেশন পর্যন্ত সব খাদ্যই পর্যায়ক্রমে সরবরাহ করে থাকে।
  • আনুষ্ঠানিক ভোজকে আকর্ষণীয় করার জন্য পরিবেশন টেবিলের কেন্দ্রীয় সজ্জায় আলো পুষ্পসজ্জা করা হয়।
  • যদি পরিবেশনকারী ডান দিক থেকে পরিবেশন শুরু করে তবে সে তার ডান হাত দিয়েই প্লেট, গ্লাস অথবা আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র, খাবার এবং খাবার দিবে এবং ডান হাত দিয়ে খাওয়া শেষে সরিয়ে নেবে আবার বাম দিক থেকে পরিবেশন করতে হলে পরিবেশনকারীকে বাম দিকে দাঁড়িয়ে বাম হাত দিয়ে সবকিছু সরিয়ে নিতে হবে এবং দিতেও হবে।

 

 

Content added || updated By

অতিথির সংখ্যা বেশি হলে, জায়গা কম থাকলে এবং বিশেষ বা প্রধান অতিথি না থাকলে বু-ফের ব্যবস্থা করা যায়। এক্ষেত্রে উৎসবগুলোও অনানুষ্ঠানিক হয়ে থাকে। যেমন-জন্মদিন, আকিকা, বিবাহবার্ষিকী ইত্যাদি।

বু-ফে পরিবেশনের রীতি

  • বিভিন্ন জায়গায়, বাসার লনে বা লম্বা বারান্দায় অথবা খোলা বাগানে, হলরুমে ইত্যাদি স্থানে কয়েকটি টেবিলে একই ধরনের খাবার সরবরাহ করা হয়
  • খাবার গ্রহণের প্লেট, গ্লাস, চামচ, কাপ আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদি একটি টেবিলে সুন্দরভাবে রাখা হয়
  • টেবিলের দুই পাশে একইভাবে অথবা টেবিলের চারপাশে একইভাবে খাবারগুলো সাজালে যে কোনো পাশ থেকে অতিথিরা প্রত্যেক প্রকার খাবার প্লেটে নিয়ে স্বাধীনভাবে পছন্দমতো জায়গায় বসে গল্পগুজবের মধ্য দিয়ে আনন্দের সাথে খাবার উপভোগ করতে পারেন।

প্রধান ডিশ

সালাদ

প্রধান ডিশ

প্রধান ডিশ

তাত

সবজি

বুফে পদ্ধতিতে খাদ্য পরিবেশন

কাজখাদ্য পরিবেশনে কোন পদ্ধতিটিকে তুমি যুগোপযোগী মনে কর এবং কেন ?

Content added By

বিভিন্ন খাবারকে মোড়কজাত করে পরিবেশন করাকে প্যাকেট পরিবেশন বলা হয়। সময়ের স্বল্পতা, দক্ষ শ্রমিকের অভাব, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বাড়তি ঝামেলা এড়ানো ইত্যাদি কারণে আজকাল প্যাকেট পরিবেশনের কদর বেড়েছে। সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন - মিলাদ, সেমিনার, ইফতার পার্টি কিংবা স্কুল-কলেজের অনুষ্ঠানে প্যাকেট পরিবেশনের বহুল ব্যবহার দেখা যায়।

প্যাকেট পরিবেশনে যেসব খাদ্য সরবরাহ করা হয় তা সুষম, আকর্ষণীয়, রুচিকর এবং বহনে সুবিধা করার জন্য কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা প্রয়োজন যেমন-

  • মোড়কজাত খাবার শুকনা হালকা হলে পরিবেশন করতে সুবিধা হয় মোড়কজাত খাবারের মেনু তৈরি করার সময় খাদ্যের চারটি মৌলিক বিভাগ থেকে খাদ্য নির্বাচনকরতে হবে।
  • উদ্ভিজ্জ প্রাণীজ প্রোটিনের সমন্বয় করা হলে মোড়কজাত খাবারের পুষ্টিমূল্য বাড়ে
  • একঘেয়েমি দুর করার জন্য মৌসুমি ফল, মুড়কি, পিঠা প্রভৃতি দেওয়া যায়
  • খাবারের ঘনত্ব এমন হওয়া উচিত যাতে প্যাকেট ভিজে না যায়
  • স্কুলের বাচ্চাদের জন্য যখন প্যাকেটে লাঞ্চ পরিবেশন করা হয় তখন তা পুষ্টিকর আকর্ষণীয় হওয়া উচিত এবং ক্যালরি প্রোটিনের দৈনিক চাহিদা // অংশ এই লাঞ্চ দ্বারা পূরণ করা উচিত।
  • প্যাকেট পরিবেশনের উপযোগী মেনু যেমন -

- সিঙারা/সমুচা, লাড্ডু/সন্দেশ, পনির, আপেল/কলা

ডালপুরি, কাবাব, সন্দেশ, সালাদ।

স্যান্ডউইচ, সালাদ (শসা, গাজর), যে কোনো শুকনা মিষ্টি

- সবজি পাকোরা, মিষ্টি, কলা

কাজ : প্যাকেট পরিবেশনের মেনু তৈরি কর এবং মূল্যায়ন কর।

Content added By
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.